আতিকুর রহমান সালু স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার সংরক্ষণের আন্দোলন আরো বেগবান করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনেরা। ২ আগষ্ট শনিবার পানি অধিকার যোদ্ধা আতিকুর রহমান সালু স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মৌলানা আকরম খাঁ হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইএফসি নিউইয়র্ক এর চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে অতিথির আসন অলংকৃত করেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, আইএফসি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জসীম উদিন আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, সাবেক এমপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, কালের কণ্ঠের সম্পাদক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইঞা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার।
অনুষ্ঠানে আইএফসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং ঝিকুট ফাউন্ডেশনের একটি টিম উপস্থিত ছিল।
আতিকুর রহমান সালু স্মারক গ্রন্থে মোট ৩০টি লেখায় তার সংগ্রামী ও কর্মময় জীবনের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার আন্দোলনে তার আপোষহীন সংগ্রাম একটা অতুলনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে যুগযুগ ধরে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কোন চুক্তি বা বোঝাপড়া ছাড়া উজানের দেশ ভারত সকল যৌথ নদীর উপর বাঁধ নির্মান করে শুকনো মওসাম পানির প্রবাহ সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে এক মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করে ঢালছে। অন্যদিকে বর্ষা মওসুমে বানের পানি বিনা নোটিশে মোড় দিয়ে সৃষ্টি করণে প্রলয়ঙ্কারী বন্যা ও নদী ভাঙ্গন। অথচ বর্তমান বিশ্বে যৌথ নদীর পানি সমস্যার সমাধান নিহিত রযেছে বেসিন ভিত্তিক যৌথ ব্যবস্থাপনায় যেন উজান ও ভাটির সকল দেশ তার সুফল পায়। এবং সাথে সাথে নদীগুলো হিমালয়ের উৎপত্তি স্থল থেকে সাগর পর্যন্ত জীবন্ত থাকে।
তারা বলেন, আতিকুর রহমান সালুর লক্ষ্য ছিল ২০০৫ সালের ৪ মার্চ চিলমারিতে অনুষ্ঠিত দশ লাখ লোকের সমাবেশের মত আরেকটি বড় সমাবেশ আয়োজন করে নদী পানির ন্যায্য হিস্যা বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের দাবী বিশ্ববাসির কাছে তুলে ধরা এবং জীবন মরণ সমস্যার সমাধানের জন্য ভারতের উপর চাপ প্রয়োগ করা। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের পরেই ১৯৭৭ সালের গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হয়েছিল।
বর্তমানে ভারতের সাথে ২৪টি যৌথ নদীর মধ্যে গঙ্গা ছাড়া অন্য কোনটির পানি ব্যবস্থাপনার চুক্তি নেই। গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ আগামি বছর (২০২৬) ডিসেম্বরে শেষ হবে। পরবর্তী চুক্তি আরও মজবুত এবং যুগোপযোগী করার আহ্বান জানান উপস্থিত বক্তারা।